Friday, September 11, 2015

সরকারের যত উদ্বোধনী অপব্যয়


সরকারি চাকুরির প্রথম দিকে ১৯৭৮ এ আমি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সেকশান অফিসার ছিলাম। তখন একদিন একটা নথি পেলাম যাতে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের একটি অনুষ্ঠানের উদ্বোধনের জন্য পাঁচ হাজার টাকার অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। পল্লী চিকিৎসক প্রকল্পের ১ম কেন্দ্র উদ্বোধন করা হয় ধামরাই থানায়। ঐ উদ্বোধনের জন্য পাঁচ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। আমি দেখলাম যে , প্রকল্পে উদ্বোধনের জন্য কোন ব্যয় ধরা নাই। তাই আমি নোটে লিখলাম যে , যেহেতু প্রকল্পে উদ্বোধন খাতে কোন ব্যয় প্রাক্কলিত নাই সুতরাং এই খাতে কোন ব্যয় করা যাবে না। তাই এই প্রস্তাবিত পাঁচ হাজার টাকা ব্যয়ের অনুমতি দেয়া যাবে না। রাষ্ট্রপতি কর্তৃক উদ্বোধনের গুরুত্ব অনুধাবন করে এই ব্যয়ে এমন নেতিবাচক প্রস্তাব না দেয়ার জন্য আমাকে কেউ কেউ বলেছিলেন। আমাকে ভয় পাইয়ে দিয়েছিলেন। আমার তখন বয়স কম। নীতি ও আদর্শের সপক্ষে শক্ত অবস্থান নিতাম। আমি ভয় পাই নাই। পাঁচ হাজার টাকার অনুমোদন আর হয় নাই। এতে অবশ্য কেউ আমার চাকুরির কোন ক্ষতিও করেনি। আজও এসব অপ্রয়োজনীয় সরকারি অপব্যয়ের বিরুদ্ধে কর্মকর্তাদের শক্ত অবস্থান নেয়া প্রয়োজন। তাহলে এ গরিব দেশটার অনেক টাকা সাশ্রয় হবে। 

Sunday, August 23, 2015

ইন্সুরেন্সের দালালদের আচরণবিধি দরকার



ইন্সুরেন্স কোম্পানীগুলোর দালালরা অফিসে কর্মরত অফিসার ও কর্মচারীদের বিরক্ত করেন ও তাঁদের কাজের ক্ষতি করেন । অফিসার ও কর্মচারীদের একটা করে ইন্সুরেন্স পলিসি করিয়ে নেয়ার জন্য দালালদের এই প্রচেষ্টা। এতে যে অফিসার ও কর্মচারীদের কাজে বিঘ্ন ঘটে এবং পরিণামে সরকারের ও দেশের বিপুল ক্ষতি হয় তা এসব দালাল ও ইন্সুরেন্স কোম্পানীগুলো বুঝতে চায় না। তাই ইন্সুরেন্স কোম্পানীগুলোর উচিত তাদের দালালরা যাতে দেশের এরুপ ক্ষতি করতে না পারে সেজন্য দালালদের একটা Code of Conduct প্রণয়ন করা এবং তা অনুসরণ করার জন্য দালালদের উপর বাধ্যবাধকতা আরোপ করা। এরুপ Code of Conduct এ সরকারী অফিস আদালতে অফিস চলাকালীন সময়ে ইন্সুরেন্সের দালালদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে। সরকারও এ বিষয়টি মনিটর করবে এবং অফিস চলাকালীন সময়ে অফিস আদালতে ইন্সুরেন্সের দালালরা যাতে প্রবেশ করতে না পারেন তা নিশ্চিত করতে হবে।

Wednesday, August 12, 2015

ফুটপাথ জবরদখল ও আকৃতি পরিবর্তন


ঢাকার রাস্তার পাশে কোন কোন ভবনের সামনের ফুটপাথ দখল করে ভবনের মালিক ফুটপাথ উঁচু করে নিজের ভবনে প্রবেশের গাড়ির রাস্তা তৈরি করেছেন। হঠাৎ উঁচু করে ফুটপাথ তৈরির ফলে পথচারীদের উক্ত উঁচু স্থানটি হেঁটে পার হতে হিমশিম খেতে হয়। অনেক সময় পথচারীরা সেখানে হোঁচট খেয়ে পড়ে যান। শিশু , মহিলা , বৃদ্ধ , অসুস্থ মানুষ খুবই কষ্ট করে এরুপ উঁচু স্থানটি পার হন। এসব দেখার কি কেউ নেই ? কেহ ইচ্ছা করলেই  কি ফুটপাথ এমন করতে পারেন ? 

Tuesday, August 11, 2015

“পান্টার মলম” বিক্রি

ঢাকা ও অন্যান্য নগরীতে / শহরে / হাটে বাজারে অবৈজ্ঞানিকভাবে প্রস্ত্তুত এবং ঔষধ প্রশাসন পরিদপ্তরের অনুমোদন-বিহীন বিভিন্ন ঔষধ বিক্রি হয়। এদের একটি হলো পান্টার মলম। রিক্সায় মাইক লাগিয়ে মারাত্মক শব্দ দূষণ সৃষ্টি করে জনসমাগমপূর্ণ স্থানে ( যেমন ঢাকার মৌচাক , মালিবাগ , মগবাজার ইত্যাদি ) এই ঔষধের অবিরাম প্রচার চলে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত। এতে প্রকট কোলাহলময় এসব স্থানে অশালীন ভাষায়  ( যেমন দুই রানের চিপায় ঘা ও চুলকানি হলে এ মলমে সেরে যাবে ) আরও শব্দদূষণ সৃষ্টি করে জীবন অতিষ্ট করে তোলা হয় । আশেপাশের অফিস , বাসাবাড়ি , ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও পথচারীদের কারো নিস্তার নেই এই মারাত্মক শব্দ-দূষণ থেকে । এ ছাড়া অবৈজ্ঞানিক ফর্মুলায় যা তা দ্রব্য দ্বারা ঝুপড়ি / বস্তিতে তৈরি এসব মলম বা ঔষধ মানবদেহে সৃষ্ট ঘা চুলকানি ইত্যাদিতে সাময়িক উপশম ঘটিয়ে মারাত্মক ক্ষত ও ক্ষতি করতে পারে। পরিবেশ অধিদপ্তর , ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ,বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউট ( বি এস টি আই ), মোবাইল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট ,  পুলিশ অথবা সরকারী কোন কর্তৃপক্ষ এসব ঔষধ মাইকে দিনের পর দিন  অবাধে খোলামেলাভাবে বিক্রি করার পরও কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় দেশে আইনের শাসন / জনস্বাস্থ্যের প্রতি সরকারের কোন আগ্রহ আছে বলে মনে হয় না।

Saturday, August 8, 2015

পোড়া সিগারেট রাস্তার প্রধান আবর্জনা

রাজধানী নগরী ঢাকা সহ দেশের সকল নগর , শহর , বন্দর ,হাটবাজারে রাস্তায় , ফুটপাথে , পার্কে , অফিস আদালতের আঙিনায় / প্রবেশপথে / সিঁড়িতে / বারান্দায় / কক্ষের ভিতরে , টয়লেটে ও এখানে সেখানে পড়ে থাকা পোড়া সিগারেটই প্রধান আবর্জনা । আপনি একটু খেয়াল করে দেখুন এসব স্থানে যত ময়লা ও আবর্জনা জমে আছে তার অর্ধেকের বেশিই পোড়া সিগারেট অথবা দেশলাইয়ের পোড়া কাঠি অথবা সিগারেটের / দেশরাইয়ের খালি প্যাকেট । উন্মুক্ত স্থানে ধূমপান নিষিদ্ধ করে আইন করা হয়েছে। কিন্তু এ আইনের প্রয়োগ নাই । কাজেই এ আইনে শাস্তির বিধান বৃদ্ধি করে জোরলোভাবে তা প্রযোগ করা হোক।

Thursday, August 6, 2015

হিজড়াদের চাঁদাবাজি

হিজড়ারা রাস্তাঘাটে মানুষকে টানাহেঁচড়া করে চাঁদাবাজি করে। তারা দোকানপাট ও বাসাবাড়িতেও হানা দেয় এবং এভাবে এক নৈরাজ্য ও অরাজকতা সৃষ্টি করে চলেছে।  মানুষ মান-সম্মান রক্ষায় এদের চাঁদা দিতে বাধ্য হয়।  পুলিশ হিজড়াদের কিছু বলে না। উল্টো পুলিশ এদের কিছু দিয়ে দেয়ার জন্য সুপারিশ করে। হিজড়াদের কি জমিদারী কায়েম হয়ে গেছে যে , তারা কাজ করবে না , শুধু চাঁদাবাজি করবে ? তারা গর্মেন্টসে কাজ করতে পারে। জামদানী ইত্যাদি শিল্পে এরা কাপড়ে ডিজাইন তোলার কাজ করতে পারে। বাঁশ বেতের কাজ , মোড়া তৈরির কাজ , আসবাবপত্র শিল্পে কাজ , পাদুকা শিল্পের কাজ ইত্যাদি হেন কাজ নেই যা তারা করতে পারে না। সরকার এ ব্যাপারে তাদের সহায়তা করতে পারে। প্রয়োজনে এদের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করে এদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে এদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিতে পারে। সরকার কোটিপতিদের সরকারী খালের উপর আলিশান ভবন বানাতে অনুমতি দিতে পারে , আর ছিন্নমূল হিজড়াদের পুনর্বাসন করে এদের কর্মমুখী পেশা গ্রহণ করতে সহায়তা দিতে পারে না ? সরকার কি শুধু ব্যবসায়ী-বান্ধব আর শিল্পপতি-বান্ধব ? সরকার কি হিজড়া-বান্ধব হতে পারে না ?

Tuesday, August 4, 2015

ফুটপাথ জবরদখলে পুলিশের ভূমিকা

ঢাকা মহানগরীতে এখন আর ফুটপাথে হাঁটা যায় না। প্রায় সব ফুটপাথ হকারে বা ফকিরে দখল করে আছে। ইদানীং জ্বলন্ত চুলায় ভাজাভুজি করার ব্যবস্থা সহ তেলেভাজা বিভিন্ন খাবারের ফুটপাথের দোকানে পেঁয়াজু , সিঙাড়া , পুরি ইত্যাদিও অবাধে পাওয়া যাচ্ছে। মোটর সাইকেল চালকেরা তো ফুটপাথে যেন পূর্ণ অধিকার সহ স্বাভাবিকভবেই মোটর সাইকেল হাঁকাচ্ছে। অথচ বছর দুয়েক আগে সুপ্রীম কোর্টে একটা রীট মামলায় নির্দেশনা দেয়া আছে যে ফুটপাথে মোটর সাইকেল চালানো যাবে না। তাই ফুটপাথে মোটর সাইকেল চালালে উক্ত নির্দেশনা মোতাবেক অপরাধযোগ্য বেআইনী কাজ করা হয়েছে বলে গণ্য হবে। সেজন্য যথার্থ শাস্তি প্রযোজ্য। পুলিশ বেআইনী কাজ রোধ করার জন্য রাস্তায় কর্তব্য পালন করে। তারা বেআইনী কাজ বন্ধ করবে। কিন্তু পুলিশ তা তো করেই না বরং ফুটপাথ জবরদখলকারী দোকানদারদের ও হকারদের সাথে প্রকাশ্যেই হাসি ঠাট্টা করে , মস্করা করে। আমরা নাকি নিম্ন মধ্য আয়ের দেশে তালিকাভুক্ত হয়ে গেছি , তাই আনন্দে বগল বাজাই।  অথচ এই ঢাকা ও অন্যান্য শহরে আমরা ফুটপাথে হাঁটতে পারি না , রাস্তায় যানজটে নাকাল হই। রাস্তাঘাট , খালবিল , নদী , হাটবাজার , কবরস্থান , ওয়াকফ / দেবোত্তর সম্পত্তি , খাস জমি , পার্ক , খেলার মাঠ , শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জায়গা জমি , হাসপাতালের জমি ইত্যাদি সব জবরদখল হয়ে যাচ্ছে প্রধানত পুলিশের সহায়তায় । তাই প্রশ্ন হচ্ছে , পুলিশ কি আইনের ঊর্ধে ?